সবাহী মক্তব শিক্ষার গুরুত্ব

“সবাহি মক্তব শিক্ষার গুরুত্ব” বুনিয়াদি দ্বীনি শিক্ষার অন্যতম অঙ্গ কোরআনের শিক্ষার গুরুত্ব এবং জাতীয় জীবনে ইহার মাহাত্ম্য উপলব্ধি করিবার পক্ষে আউলিয়া কেরাম দের বাণী নিম্নে বর্ণনা করা হলঃ কুতবুল আলম শেখুল ইসলাম হজরত মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ:)বাণীঃ- একমাত্র মক্তব মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা ও উন্নতি সাধন দারাই এই সেক্যুলার দেশের মুসলমানদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করা সম্ভব। এই জন্যই অসাধারণ প্রয়াস প্রচেষ্টা প্রত্যেক মুসলমানদের পক্ষে ফরজ। হজরত মওলানা আবুল কালাম আজাদ(রহঃ) বাণীঃ- মুসলমান গন এক স্বতন্ত্র এবং বিশিষ্ট সভ্যতা ও তমদ্দুনের অধিকারী, ইহার সংরক্ষন ও উন্নতি বিধানের অধিকার তাহাদের আছে। একমাত্র দ্বীনি শিক্ষার উপরই নির্ভর করে এই তাহজিব তমদ্দুনের স্থিতি। হজরত মওলানা আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মিরী (রহঃ) বাণীঃ- ক্ষোভ প্রকাশ করিয়া বলিতেন ছাত্ররা দারুল উলুম হইতে শিক্ষা সমাপ্ত করার পর চেষ্টায় লাগিয়া যায় কোথায় ও কোন মাদ্রাসার মুহতামিম, মোহাদ্দেস বা ছদর হওয়া যায় কিনা! “আমার অন্তর চায় তারা প্রতি গ্রামে গ্রামে আদর্শ মক্তব প্রতিষ্ঠা করুক”।বর্তমানে ইহাই শ্রেষ্ঠতম খেদমত। বর্তমান কালে উম্মতের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছিয়াছে উপলব্ধি করিয়া হজরত মাওলানা ইলিয়াস সাহেব (রহ:)এক আন্দোলন পরিচালনা করিয়া যান। উহার ফলাফল বেশ বিস্তার লাভ করেছে।প্রতি তবকাতেই কিছু কিছু দ্বীনদার লোক দেখা যাইতেছে। শায়খুল ইসলাম হজরত মওলানা সৈয়ীদ হুসাইন আহমদ মদনী (রহ:) এর সুযোগ্য শিষ্য ও খলিফা হজরত মওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী (রহ:) বর্তমান যুগের এই করুন অবস্থা বিশেষ ভাবে উপলব্ধি করিলেন যে শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত এই দেশে দ্বীনি শিক্ষার ছবাহি মক্তব প্রতিষ্ঠা করার রেওয়াজ রহিয়াছে কিন্তু এইগুলির সংরক্ষণ সুশৃংখল পদ্ধতিতে পরিচালনা এবং যথাযথ উন্নতি বিধানের জন্য দেশে কোন সঙ্ঘবদ্ধ ব্যবস্থা না থাকায় একদিকে এই রেওয়াজি মক্তব গুলি যেমন নির্জীব এবং অচল হইতে চলিয়াছে অন্যদিকে দেশের হাজার হাজার দ্বীনদার তবকার চাহিদা ও এলাকার প্রয়োজন মোতাবেক মক্তব ও প্রতিষ্ঠা করা যাইতেছে না। বিজ্ঞানসম্মত কোন শিক্ষার পদ্ধতি বর্তমানে না থাকায় মক্তব গুলিতে “যার যেমন খুশি” নীতিতে পড়াশোনা হইতেছে। অন্যদিকে আদর্শ মোয়াল্লীম গড়িয়া তোলার কোন বলিষ্ঠ ব্যবস্থা না থাকায় মক্তবের চাহিদা মোতাবেক উপযুক্ত উস্তাদ ও সরবরাহ করা যাইতেছে না। কাজেই শিশুদের অমুল্য জীবন অংকুরেই বিনষ্ট হইতে চলিয়াছে দেখিয়া তিনি ১৯৬৩ ইংরেজিতে “এদারায়ে তালীম ও তানজিম” নামে নামকরণ করে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে স্থানে আদর্শ মক্তব শিক্ষার জন্য কয়েক গুলি মক্তব নির্বাচন করে একটি স্কিম চালু করেন। সাথে সাথে প্রত্যেক মুসলমান যাহাতে প্রকৃত খাঁটি মুসলমান হিসাবে জীবন যাপন করিতে পারে সেই হিসাবে পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে এই প্রচেষ্টা ক্রমান্বয়ে অগ্রসর হয়ে উত্তর পূর্ব ভারতে দওরে ছাহাবা ফিরাইয়া আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করে তিনি এমারতে শরয়ীয়াহ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৬ ইংরেজিতে তাহাকে প্রথম আমীরে শরীয়ত নির্বাচিত করা হয়। তাহার মৃত্যুর পর ২ য় আমীরে শরীয়ত হজরত মওলানা তৈয়ীবুর রহমান বড়ভূইয়া সাহেব তাহারই অনুসরণ করে দিনের কাজ ক্রমান্বয়ে অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করিয়াছেন। ২ য় আমীরে শরীয়তের মৃত্যুর পর, ৩ য় আমীরে শরীয়ত হজরত মওলানা ইউছুফ আলী ছাহেব তাহারই পদাংক অনুসরণ করে দীনের কাজ পরিচালিত করিয়া লইয়া যাইতেছেন। কিন্তু আমরা যদি সজাগ সচেতন না থাকি তাহা হইলে আমাদের পূর্ববর্তী বুজুর্গ গন যেভাবে একটি প্রতিষ্টান গড়িয়া তাহার মাধ্যমে দ্বীন ইসলামের খেদমত করিয়া গিয়াছিলেন এবং তাহাদের ইন্তেকালের পর আবার সেই গুলো নির্জীব হইয়া পড়িয়া যায়, সেই হিসাবে আমাদের প্রথম ও দ্বিতীয় আমীরে শরীয়ত তাহারা যে দায়িত্ব আদায় করিয়া চলিয়া গিয়াছেন এবং আমাদের উপর সেই দায়িত্ব ন্যসত করিয়া গিয়াছেন, আমরা আজ উদাসীন থাকি তাহলে কাল কেয়ামতের ময়দানে আমাদেরকে জবাবদিহি হইতে হইবে।

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started