এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই

এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করতে পারে না, তাকে অসহায় অবস্থায় পরিত্যাগ করতে পারে না এবং তাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে পারে না। তিনি নিজের বুকের দিকে ইশারা করে বলেন, তাকওয়া এখানে, তাকওয়া এখানে, তাকওয়া এখানে। কোনো লোকের নিকৃষ্ট সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার মুসলিম ভাইকে তুচ্ছজ্ঞান করে। প্রত্যেক মুসলমানের জীবন, ধন-সম্পদ ও মানসম্মান প্রত্যেক মুসলমানের সম্মানের বস্তু (এর ওপর হস্তক্ষেপ করা তাদের জন্য হারাম) মুসলিম থেকে মিশকাতে।

পবিত্র কোরআনে বিশ্বাসীদের একে অপরের সহযোগী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ করা হয়েছে ‘সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করবে’ (সূরা মায়িদা : ২)

ইসলামী ভ্রাতৃত্বের দাবি হচ্ছে, এক মুসলমান অপর মুসলমানের ওপর নিজেও জুলুম করবে না, তাকে জালেমের হাতেও তুলে দেবে না এবং নিজের আর্থিক, বংশীয়, দৈহিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাধান্যের ভিত্তিতে অন্যকে তুচ্ছজ্ঞান করবে না। তাকওয়ার মূল কেন্দ্র হচ্ছে অন্তর। মানুষের অন্তর রাজ্যে যদি তাকওয়ার বীজ শিকড় গাড়তে পারে তবে তার বাহ্যিক দিকও সৎ কাজের পত্র-পল্লবে সুশোভিত হয়ে যায়। কিন্তু অন্তরেই যদি তাকওয়ার নাম-নিশানা না থাকে তবে তাকওয়ার বাহ্যিক মহড়ায় নৈতিক চরিত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে না, আখেরাতের সাফল্য অনিশ্চিত হয়ে উঠবে। মুসলিম সমাজে কোনো মুসলমানের জানমাল ও ইজ্জত-আব্রুর ওপর আক্রমণ করা নিকৃষ্টতম অপরাধ। এর জন্য দুনিয়াতেও কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে এবং আখেরাতেও এ ধরনের অপরাধে লিপ্ত ব্যক্তি আল্লাহর আজাব থেকে রেহাই পাবে না।

দুনিয়ার সব মানুষ প্রথম মানব-মানবী আদম ও হাওয়ার সন্তান বা বংশধর। যে কারণে ইসলাম এক মানুষের সঙ্গে অপর মানুষের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন প্রতিষ্ঠাকে উৎসাহিত করেছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের যে সম্পর্ক সৃষ্টি করেন তার পরিণতিতে তারা ক্ষমতাধর জাতিতে পরিণত হয়। ঐশী চেতনায় মুসলমানরা সব প্রতিকূলতাকে জয় করার কৃতিত্ব দেখায়। যে আরবরা ছিল শতধা বিভক্ত, হানাহানি ছিল যাদের স্বভাবের অংশ, তারা ঐক্যবদ্ধ জাতিতে পরিণত হয়।

মুসলমান হিসেবে নিজেদের দাবি করতে হলে ইসলামের ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। এ শিক্ষা জাতীয় ঐক্য, সামাজিক ও পারিবারিক শান্তি ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started